ARTPOET.IN

অনেক হাজার বছরের | onek hajar bochhorer

অনেক হাজার বছরের

মরু-যবনিকার আচ্ছাদন

যখন উৎক্ষিপ্ত হল,

দেখা দিল তারিখ-হারানো লোকালয়ের

বিরাট কঙ্কাল;–

ইতিহাসের অলক্ষ্য অন্তরালে

ছিল তার জীবনক্ষেত্র।

তার মুখরিত শতাব্দী

আপনার সমস্ত কবিগান

বাণীহীন অতলে দিয়েছে বিসর্জন।

আর, যে-সব গান তখনো ছিল অঙ্কুরে, ছিল মুকুলে,

যে বিপুল সম্ভাব্য

সেদিন অনালোকে ছিল প্রচ্ছন্ন

অপ্রকাশ থেকে অপ্রকাশেই গেল মগ্ন হয়ে–

যা ছিল অপ্রজ্বল ধোঁওয়ার গোপন আচ্ছাদনে

তাও নিবল।

যা বিকাল, আর যা বিকাল না,–

দুই-ই সংসারের হাট থেকে গেল চলে

একই মূল্যের ছাপ নিয়ে।

কোথাও রইল না তার ক্ষত,

কোথাও বাজল না তার ক্ষতি।

ঐ নির্মল নিঃশব্দ আকাশে

অসংখ্য কল্প-কল্পান্তরের

হয়েছে আবর্তন।

নূতন নূতন বিশ্ব

অন্ধকারের নাড়ি ছিঁড়ে

জন্ম নিয়েছে আলোকে,

ভেসে চলেছে আলোড়িত নক্ষত্রের ফেনপুঞ্জে;

অবশেষে যুগান্তে তারা তেমনি করেই গেছে

যেমন গেছে বর্ষণশান্ত মেঘ,

যেমন গেছে ক্ষণজীবী পতঙ্গ।

মহাকাল, সন্ন্যাসী তুমি।

তোমার অতলস্পর্শ ধ্যানের তরঙ্গ-শিখরে

উচ্ছ্রিত হয়ে উঠছে সৃষ্টি

আবার নেমে যাচ্ছে ধ্যানের তরঙ্গতলে।

প্রচণ্ড বেগে চলেছে ব্যক্ত অব্যক্তের চক্রনৃত্য,

তারি নিস্তব্ধ কেন্দ্রস্থলে

তুমি আছ অবিচলিত আনন্দে।

হে নির্মম, দাও আমাকে তোমার ঐ সন্ন্যাসের দীক্ষা।

জীবন আর মৃত্যু, পাওয়া আর হারানোর মাঝখানে

যেখানে আছে অক্ষুব্ধ শান্তি

সেই সৃষ্টি-হোমাগ্নিশিখার অন্তরতম

স্তিমিত নিভৃতে

দাও আমাকে আশ্রয়।

– 

error: Content is protected !!
Scroll to Top